মাওলানা সফিউর রহমান মুবারকপুরী রহ. জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ১৯৪৩ সনের ৬ জুন ভারতের উত্তর প্রদেশের মুবারকপুরের হুসাইনাবাদ নামক গ্রামে। কথিত আছে, তিনি ছিলেন ছাহাবী আবু আইয়ুব আনসারী রা. এর বংশধর। আপন পল্লী গাঁয়ে কুরআনে কারীমের মাধ্যমে তার শিক্ষা জীবনের অভিষেক হয়েছিল। পরবর্তীতে এক সুদীর্ঘ কাল পরে ১৯৭৬ সনে আরবি সাহিত্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রী লাভ করার মধ্য দিয়ে উপসংহার এরই মাঝে ১৯৭৬ সনের মার্চ মাসে রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর উদ্দ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক টেনেছিলেন। সীরাত প্রতিযোগিতায় ‘আর রাহীকুল মাখতুম' নিয়ে তিনি বিশ্বের নাট্য মঞ্চে আবির্ভূত হন । এরপর জীবনে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দাওয়াত, তাবলীগ ও তাসনীফাতের মধ্য দিয়ে খুব দ্রুতই অতিক্রম করে গিয়েছেন জীবনের প্রতিটি মনযিল। আরবি ও উর্দু ভাষায় তাঁর রচিত গ্রন্থ সংখ্যা ত্রিশোর্ধ ।
কর্মজীবনে তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও সর্বশেষ রিয়াদের মাকতাবায়ে দারুস সালামে গবেষণার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। দল ও মত, মাযহাব ও দর্শনের বিবেচনায় যত মত-পার্থক্যই থাক, মানুষ হিসেবে একান্ত জীবনে তিনি ছিলেন সত্যিই উদার, সরল ও সাদা মনের একটি মানুষ। কারও সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক কখনোই সাংঘর্ষিক ছিল না। আর তাঁর অমর গ্রন্থ 'আর রাহীকুল মাখতূম' অধ্যয়ন করলেও বোঝা যায়, ব্যক্তিগত জীবনের দর্শনের লেশমাত্র ছাপও তিনি পড়তে দেননি। বরং ইলম ও ইখলাসের সবটুকু রস ও মাধুরী মিশিয়ে তিনি সীরাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়া সাল্লাম কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিরবিচ্ছিন্ন মেহনত ও পরিশ্রমের ফলে জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি মারাত্মক ভগ্নস্বাস্থ্য ও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সনের মাঝামাঝি সময়ে ধীরে ধীরে তিনি আরও নেতিয়ে পড়েন। পরিশেষে একই বছর পয়লা ডিসেম্বরে পবিত্র জুমুআর দিন বেলা ২ টার সময় তিনি মাওলা পাকের সান্নিধ্যে পরপারে পাড়ি জমান। পৃথিবীতে আপন কীর্তির স্বাক্ষর স্বরূপ রেখে যান কালজয়ী অমর গ্রন্থ 'আর রাহীকুল মাখতুম'