Author : মুহম্মদ নিজাম
ক্যাটাগরি: ঐতিহাসিক উপন্যাস
0 Rating / 0 Review
প্রায় প্রতিটা মঙ্গলকাব্যেই একইসঙ্গে দেবতা ও মানুষের লীলা চলে।
মঙ্গলকাব্যগুলি তাই স্পষ্টতই মহাকাব্যের উপসর্গে আক্রান্ত।
অগ্নিপুরাণের সিক্যুয়েল হিসেবে যে দারুণ গল্পটি আমরা এই বসন্তে পাঠকের হাতে তুলে দেবার দুঃসাহস দেখাচ্ছি, সেখানে উপমহাদেশের হাজার বছরের প্রতিষ্ঠিত দেব-দেবীর পাশাপাশি নতুন এক স্রষ্টার নাম শুনা যাচ্ছে,"আল্লাহ!"
স্রষ্টা কিংবা ভগবান শব্দটার পরিবর্তে বঙ্গদেশের প্রান্তিক কিছু মানুষ "দেওতা" শব্দটাই অধিক ব্যবহার করছে। ওদের ভাষ্যে, "আল্লাহ একজন দেওতা! যবন দেওতা!"
এই বাক্য পাঠ করে ইতিহাসের আনাড়ি অনেক পাঠক চমকে উঠবেন সত্য। অনেকে হয়তো লেখকের নামেও অভিসম্পাত বর্ষণ করবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, যেসব মানুষের কথা আমরা বলছি, তারা যতখানি না আমার আত্মীয় ঠিক ততখানিই আপনাদের। ওরা আমাদেরই পূর্বপুরুষেরা!
আর বঙ্গদেশের ইতিহাসের নাট্যমঞ্চে ঘটনাগুলি ঠিক এইভাবেই প্রস্ফুটিত হয়েছে।
অগ্নিমঙ্গল হাটে তুলবার আগেই বঙ্গদেশের প্রিয়তম পাঠকদের কাছে ইতিহাসের একজন বিস্ময়যুবকের নাম জানতে চাই। যুবকের নাম হুসামউদ্দীন ইওজ হোসেন খলজি। সংক্ষেপে ইওজ কিংবা ইওজ খলজি।
পাঠক! আপনারা কে কতদূর কী জানেন তাঁর সম্পর্কে? কী কী জানেন?
বখতিয়ারের মৃত্যুর পর বাংলার সদ্য প্রতিষ্ঠিত মুসলিম রাজ্যটিকে স্থায়ী একটি মুসলিম শক্তিকেন্দ্র রূপে গড়ে তুলবার পেছন ওঁর অবদান কতখানি?
*শাহ-ই-বাঙ্গালা খ্যাত শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহকে আমরা সকলেই চিনি। কিন্তু ইলিয়াস শাহেরও এক দুই শতাব্দী আগে লখনৌতির মুসলিম রাজ্যকে যিনি প্রথম "বাংলার মুসলিম রাজ্য" হিসেবে গড়ে তুলবার স্বপ্ন দেখতেন তিনিই ইওজ।
ইওজ হোসেন খলজি!
শুধুমাত্র ইওজকে নিয়ে এখন অবধি কোন মৌলিক গবেষণাগ্রন্থ লিখা হয় নি। হলেও তা আমি অন্তত খুঁজে পাইনি।
অথচ বখতিয়ারের মৃত্যুর পর তিনিই প্রথম দিল্লীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বাংলার মুসলিম রাজ্যকে একটা স্থায়ী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করে সুদীর্ঘ ১৪ বছর পরাক্রান্ত মেজাজে শাসন করেছেন।
একদিকে দিল্লীর সৈন্যদের আক্রমণ প্রতিহত করেছেন অন্যদিকে রাঢ়-ত্রিহুত-বঙ্গ-কামরূপ- অর্থাৎ বাংলার মুসলিম রাজ্যের চতুর্পাশে বিজয় অভিযান প্রেরণ করে সফলভাবে ফিরে এসেছেন।
অগ্নিমঙ্গলে ইওজের কথাই বলেছি। ইওজকে নিয়ে একদিন নিশ্চয়ই আরও অনেক অনেক গ্রন্থ লেখা হবে। আমি শুধু ঔপন্যাসিকের মেজাজ বজায় রেখে প্রায় গবেষণাগ্রন্থের মতো তার স্বরূপ উন্মুচনের চেষ্টা করেছি।
তবে হ্যা,
অগ্নিমঙ্গল উপাখ্যানে রাজ কাহিনী যতটুকু তারচেয়েও বেশি আছে বঙ্গদেশের কিছু প্রান্তজনের কথা, যারা 'কা'বার ঐ প্রভূ- আল্লাহ'কে প্রথমে 'আল্লাহ দেওতা' ভেবে ভ্রম করেছিল, তারপর ভালোবেসেছিল...
আছে সেই-সে সেনরাজ্যের কথা, যার শক্তিসামর্থ্যকে ভয় পেয়ে লখনৌতির মুসলিম সুলতানেরা থেকে থেকে কেঁপে উঠতে বাধ্য হতো!
লক্ষ্মণসেনের পতনের মধ্য দিয়ে বখতিয়ার কিছুতেই সমগ্র বঙ্গদেশ দখল করতে পারেননি। মুসলিম সেনাপতিদের আরও প্রায় অর্ধশতবর্ষ লেগে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গ থেকে আজকের ঢাকা কিংবা বিক্রমপুর অবধি আসতে আসতে...
আর সেই অর্থশত বছরে আরও কতশত বিদ্রোহী পরাক্রান্ত সুলতান ও সেনানায়কদের উত্থান... শতশত যুদ্ধ... অবিশ্রান্ত বলীদান...
Title | অগ্নিমঙ্গল |
---|---|
Author | মুহম্মদ নিজাম |
Publisher | ৫২ (বায়ান্ন) |
Edition | 1st Published, 2021 |
Number of Pages | 400 |
Country | Bangladesh |
Language | বাংলা |